বাংলাদেশের অবস্থান
ফ্রীলেন্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৩য়। ভালো অবস্থান সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের চাইতে অনেক এগিয়ে। তাই র্শীষ স্থানে পৌছাতে এখনো বাংলাদেশকে অনেক কাজ করতে হবে। দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে আরো অনেক নতুন নতুন ফ্রীল্যান্সার। কিন্তু ফ্রীল্যান্সার হওয়ার স্বপ্নে পা বাড়ালেই তৈরী হয় জল্পনা কল্পনা আর ভুল বোঝাবুঝি। কোন পথে আপনি সফল হবেন। কোন পথে গেলে স্বপ্নের ক্যারিয়ার ফ্রিলেন্সিং এর দ্বারপ্রান্তে পৌছতে পারবেন, তা নিয়ে যেন সংশয়ের শেষ নেই, রয়েছে যথেষ্ট দ্বিধাদন্দ, উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা।অনলাইনে আয়ের এ পথ, সে পথ :
অনলাইনে আয়ের অনেক পথ, এ সম্পর্কে নতুনদের জানার ইচ্ছা অনেক, কিন্তু কিভাবে আর্নিং হবে, কোথা থেকে শুরু করা যায়, এ নিয়ে যেন জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। তবু অনলাইন আর্নিং বিষয়ে জানার আগ্রহ সবসময়ই কম বেশি সবারই থাকে, সবাই চায় কিছু শিখে তার মাধ্যমে আয় করার একটি পথ তৈরী করতে। শুধু উপযুক্ত নির্দেশনার অভাবে কাজের আগ্রহ হারাচ্ছে নতুন করে আগত ফ্রি লেন্সার হতে আগ্রহী তরুণরা। অনেকের মুখে শুনি অনলাইন এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা যায়, কিন্তু কিভাবে করে? তার পদ্ধতি কি? অনলাইন এ অনেক কাজ আছে, কিন্তু আমি কি কাজ করব? কোনো কাজ ই তো ভালোভাবে পারিনা। কোন কাজে সফলতা আসবে, তা বুঝব কি করে? ব্যর্থতার ভয়ে সামনে এগুতে পারছিনা। দিধাদন্দ সংকোচ সব বাদ দিয়ে ধরে নিলাম আপনি কোনো কাজ জানেন না। সেক্ষেত্রে কি করবেন? শুরু থেকে আপনার করণীয় কি হতে পারে আসুন একটু যাচাই করে নেয়া যাক। শুরুতে যেসব কাজ করতে কোনো স্কীল এর প্রয়োজন হয়না, আপনি সেসব কাজ করতে পারেন। পাশাপশি চেষ্টা করতে পারেন কার্যকরী নতুন করে কিছু শেখার জন্য, যা আপনাকে আয় করতে সাহায্য করবে।অনলাইনে কোথায় কাজ পাবেন ?
আপনি করতে পারেন এফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং, ফোরাম টিউনিং, ওয়েব রিসার্চ, কপি পেস্ট, ডাটা এন্ট্রি এর মত কাজগুলো। কোথায় পাবেন কাজগুলো? কাজগুলো পাওয়ার জন্য আপনাকে কয়েকটি ওয়েবসাইট এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আপনি রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন http://www.odesk.com এ সাইনআপ এর মাধ্যমে। রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন http://www.freelancer.com এ সাইনআপ এর মাধ্যমে। রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনhttp://www.elance.com এ। এছাড়াও ছোট ছোট কাজ করতে http://www.microworkers.com এ সাইনআপ করতে পারেন। সাইনআপ এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করলেন, কিন্তু কাজ পাবেন কিভাবে? ধৈর্য ধরে বিষয়টি অনুধাবন করুন, আগেই টাকা তোলার চিন্তা করবেননা, টাকা ইনকাম করার পথটি আগে ক্লিয়ার করা উচিত। আপনি odesk এ রেজিস্ট্রেশন করলেন। এখন আপনাকে odesk এ একটি রেডিনেস টেস্ট দিতে হবে, যেটা দেয়ার মাধ্যমে আপনি কাজ পাওয়ার প্রাথমিক অনুমতি পাবেন। আপনার যদি কোনো প্রোগ্রাম ভালো জানা থাকে তবে সে বিষয়ে আপনি পরীক্ষা দিতে পারেন তারপর পরীক্ষায় পাশ করলে আপনি ওই বিষয়ে কাজের জন্য এপ্লাই করে কাজ পেতে পারেন। মনে করেন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন ভালো পারেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে এ বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিতে হবে। নয়তো গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজগুলো আপনি পাবেননা। আপনাকে এ পরীক্ষায় পাশ করার জন্য odesk সিলেবাস স্টাডি করুন। এরপর আপনি বিভিন্ন টেস্ট দিতে পারেন। যত বেশি টেস্ট দিবেন আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়বে, আপনার প্রোফাইল এর প্রগ্রেস ও র্স্টেটাস বাড়তে থাকবে। কাজ পাওয়ার জন্য নিয়মিত অনলাইন এ থাকুন, বিড করতে থাকুন প্রতিনিয়ত। একসময় আপনি কাজ পাবেন, এটা নিশ্চিত। কাজ না পেয়ে আপনি হাল ছেড়ে দিলে ভুল করবেন। চেষ্টা করতে থাকুন, ইনশাআল্লাহ আপনি সফল হবেন।আপনি Freelancer এ রেজিস্ট্রেশন করলেন। Freelancer এ কাজ করতে গেলে odesk এর মত প্রাথমিক টেস্ট যেটি দিতে হয় সেটা দিতে হয়না, তাই আপনি এ সাইট এ রেজিষ্ট্রশন করেই কাজের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। তবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে আপনি আপনার প্রোফাইল কে সম্পূর্ণ করা কিংবা স্কীল টেস্ট দেয়ার মাধ্যমে আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারেন। যা আপনার কাজ পাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সহায়ক হবে। আপনি Elance এ রেজিস্ট্রেশন করলেন। Elance এ কাজ করতে গেলে odesk এর মত প্রাথমিক টেস্ট যেটি দিতে হয় সেটা দিতে হয়না, তাই আপনি এ সাইট এ রেজিষ্ট্রশন করেই কাজের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। তবে তার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে আপনার একাউন্ট ভেরিফাই করে নিতে হবে। কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে আপনি আপনার প্রোফাইলকে সম্পূর্ণ করা কিংবা স্কীল টেস্ট দেয়ার মাধ্যমে এখানেও একইভাবে আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারেন। যা আপনার কাজ পাওয়ার ব্যাপারে আরো সহায়ক হবে। আপনি Microworkers এ রেজিস্ট্রেশন করলেন। Microworkers এ কাজ করতে কোন রকম টেস্টই দিতে হয়না। এখানে ছোট ছোট ব্যাপক কাজ রয়েছে। ছোট বালুকার কনা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তলে মহাদেশ সাগর অতল। এ প্রবাদটি সামনে রেখে এ সাইট-এ নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন। ব্যালেন্স জমা হতে হতে যখন বড় একটি এমাউন্ট হবে তখন আপনি তোলার চিন্তা করবেন।
কিভাবে কাজ পাবেন ?
অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে গভীর রাতে চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে রাত ৩ টা থেকে সকাল ৮ টার মধ্যে যদি বিড করতে পারেন তবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকবে। আর অবশ্যই কভার লেটারটাও সুন্দর করে সাজিয়ে লিখবেন। আপনি কি জানেন তা বায়ারের কাছে উপস্থাপন করুন, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। আপনার টাকার চেয়ে মার্কেটপ্লেসে ফীডব্যাকের গুরুত্ব বেশী এটা হাইলাইট করুন। আর অবশ্যই বায়ারের বাজেটের মধ্যে বিড করতে হবে। Digital Mathbariaযা মনে রাখতে হবে
অনলাইনে আয়ের সবচেয় ভালো দিক হচ্ছে মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে আয় করা, এজন্য বায়ার এর সাথে যোগাযোগটা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এতে আপনি ভালো ফল পাবেন। আপনি যে কাজ পারেন সে কাজের সাথে সম্পৃক্ত যত কাজ আছে সেগুলোতেই বিড করতে থাকুন। এফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং, ফোরাম টিউনিং, ওয়েব রিসার্চ, কপি পেস্ট, ডাটা এন্ট্রি এর মত কাজগুলো করার জন্য আপনার পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকার প্রয়োজন নেই। কাজের জন্য এপ্লাই করার ক্ষেত্রে ভেরিফাইড বায়ার দেখে এপ্লাই করা ফলপ্রসু হবে। আর ঘন্টাভিত্তিক কাজের জন্য আপনি ঘন্টার রেট উল্লেখ করে দিতে পারেন, ফিক্সড টাইমের কাজগুলোর পেমেন্টের নিশ্চয়তা কম আর এক্ষেত্রে পেমেন্ট নিতে হবে কাজের শেষে, ঘন্টাভিত্তিক কাজে পেমেন্ট ঘন্টায় ঘন্টায় পাবেন। সর্বোপরি এসব কাজে লেগে থাকার কোনো বিকল্প নেই।আরো কি কি উপায় আছে ?
আপনি উপরের সবকটি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মধ্যে কোনটিতেই সাইনআপ করলেননা, তো কি করবেন? ভেঙ্গে পড়বেননা আপনার জন্য আরো পথ আছে। ক্লিক করে টাকা ইনকাম এর জন্য আমি আপনাকে পরামর্শ দিবনা, কেননা এ পথে টাকা আয়ের জন্য আপনি যতটা শ্রম দিবেন, তা যদি উপরের ৩টি সাইট এ দিতে পারেন, তবে আপনি একজন প্রফেশনাল ফ্রিলেন্সার হয়ে যাবেন এটা নিশ্চিত। সৃজনশীল কোনো কাজে সময় দিতে পারলে আপনার শ্রম এবং দক্ষতা ২টি-ই কাজে আসবে। আপনি গুগল এর ব্লগার এর মাধ্যমে একটি ফ্রি সাইট তৈরী করতে পারেন। এ সাইটের মাধ্যমে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করেও আপনি আয় করতে পারেন। এজন্য ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে বাড়তি টাকা খরচ করারও প্রয়োজন পড়ছেনা।এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য নিচের সাইটগুলো আপনাকে সাহায্য করবে-
১। লিংক শেয়ার ২। সিজে ৩। এমাজন ৪। ক্লিকব্যান্ক ৫। শেয়ার এ সেলটাকা কিভাবে হাতে পাবেন ?
অনলাইনে আয় করা টাকা হাতে আনার বিভিন্ন উপায় আছে। প্রত্যেকটি মার্কেটপ্লেসেই পেমেন্ট মেখড সেট করে আপনি টাকা হাতে আনতে পারেন। এজন্য পছন্দ অনুযায়ী আপনি পেমেন্ট মেথড বেছে নিবেন। পাইওনিয়ার ডেবিট র্কাড, মাস্টার র্কাড, মানিবুর্কাস র্কাড এর মাধ্যমে আপনি টাকা আনতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করা টাকা পেপাল একাউন্ট থাকলে তার মাধ্যমে তুলতে পারবেন। আর না থাকলে অন্য মেথড প্রয়োগ করে টাকা হাতে আনতে পারবেন। গুগল এডসেন্স এর ক্ষেত্রে ওয়্যার ট্রান্সফার টু ব্যাংক একাউন্ট নির্ধারণ করতে পারেন। এছাড়াও ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ও চেক এর মাধ্যমে টাকা গ্রহণের পদ্ধতিও আছে। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়, চেক এর মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করলে আপনাকে ১-২ মাস অপেক্ষা করা লাগতে পারে। কিন্তু ওয়্যার ট্রান্সফার টু ব্যাংক একাউন্ট মেথডটি ব্যবহার করলে মাত্র ৩-৪ ওয়ার্কিং ডে তেই আপনি টাকা হাতে পেয়ে যাবেন, তবে এজন্য ব্যাংক আপনার কাছ থেকে কাটবে ২৫ ডলার এর মত। কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হলে কি করবেন ? অনলাইন আর্নিং এবং আউটসোর্সিংকিংবা ফ্রিলেন্সিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন থাকলে এ কমিউনিটির বিজ্ঞ ভাইদের নক করতে পারেন। পাশাপাশি দেখতে পারেন টেকটিউনস-এ প্রকাশিত অনলাইন আয়ের উপর মান সম্মত টিউনগুলো। এখন অনলাইন এ আয় বিষয়ক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সেমিনার হয়ে থাকে, সেগুলোতে অংশ গ্রহণ করেও কিছু জানা বুঝার সুযোগ নিতে পারেন ।শেষ কথা:
অনলাইনে আয়ের জন্য কোন পথে যাবেন, কোখায় যাবেন, কিভাবে যাবেন, এবার নিজেই ঠিক করুন। স্বপ্নের ক্যারিয়ার ফ্রীলান্সিং এর জগতে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাক বাংলাদেশ… আরো এক ধাপ এগিয়ে যান আপনি নিজেই। সাফল্যের রাজ্যের কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। চুনে মুখ পুড়লে দইকেও ভয় পেতে হয়, যার বাপকে কুমিরে খেয়েছে তারতো ঢেকী দেখেও ভয় পাওয়ারই কথা। অনলাইন কাজের নামে যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের বিভ্রান্ত না হয়ে স্বচ্ছ ধারণা এবং উপযুক্ত নির্দেশনার মাধ্যমে পুরোদমে কাজ করার সুযোগ এখনো আছে। হাত বাড়ালেই এ সুযোগের পুরো দাবীদার আপনিও হতে পারেন। হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারেন স্বপ্নের ক্যারিয়ার ফ্রিল্যান্সিং। আমি চেষ্টা করেছি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ একটি গাইড লাইন আপনাদের সামনে উপস্থাপনের জন্য, কতটুকু পেরেছি জানিনা, আশা করি এ চেষ্টা সম্পূর্ণ বৃথা যাবেনা। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।পূর্বে প্রকাশিত এখানে
ফেসবুকে আমি
TechTube BD
0 comments:
Post a Comment